এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস মহামারিতে পৃথিবীজুড়ে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৩৫ লক্ষ মানুষ এবং মৃত্যুবরণ করেছেন প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ। এই মহামারিটি পরিবর্তন এনেছে আমাদের জীবনযাত্রায়, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় এবং কর্মকৌশলে। ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার দেশগুলোতে রোগাক্রান্ত ও মৃত্যুর হার কমে এলেও এই মহামারি এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোতে দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির নতুন প্রতিবেদন অনুযায়ী করোনাভাইরাস-উদ্ভূত লকডাউনের কারণে ২০২০ সালের শেষ নাগাদ নিম্ন-আয় ও মধ্য-আয়ের দেশের প্রায় ২৬ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষ তীব্র ক্ষুধার মুখোমুখি হবে।
বাংলাদেশে সকল উপজেলা পর্যায়ে সরকারি হাসপাতাল স্থাপন করার বড় কারণ ছিল, রোগীর বাড়ি থেকে হাসপাতাল যাতে কাছে হয়। প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসরত রোগীর হঠাৎ কোন সমস্যার সাময়িক অথবা স্থায়ী সমাধানের জন্য সরকারের এই বিনিয়োগ কাজে এসেছে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে জাতীয় পর্যায়ের দুর্যোগ নতুন কিছু নয়। রাজনৈতিক অস্থিরতা, সামরিক অভ্যুত্থান এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য আমাদের দেশকে ভীষণ দুর্দশার চিত্রসহ বৈশ্বিক গণমাধ্যমের শিরোনাম হতে হয়েছে বহুবার। এদেশের জনগণ এবং নেতৃত্ব তাদের দৃঢ়তা এবং সফলতার জন্য ব্যাপকভাবে প্রশংসিতও হয়েছে।কিন্তু কোভিড-১৯ কর্তৃক সৃষ্ট লকডাউন পরিস্থিতি কিছুটা ব্যতিক্রম। দীর্ঘকালীন প্রভাবের কারণে এই অচলাবস্থা নিঃসন্দেহে ১৯৯৮’র বন্যা কিংবা বিভিন্ন সময়ের রাজনৈতিক অস্থিরতার থেকে সৃষ্টদেশের বিগত অচলাবস্থাগুলোর তুলনায় বৃহৎ।
ছবিতে আমার “হোম-অফিস”। ল্যাপটপ, খাতা-কলম, ফোন, কিছু স্টেশনারি আর হার্ড-কপির বইসহ একটা টেবিল আর একটা চেয়ার।
গবেষণা, ডাটা ঘাটাঘাটি, অল্পবিস্তর পড়াশুনা আর প্রয়োজনে অফিসের ভিডিও-অডিও কনফারেন্সে অংশ নেওয়া। এই হল হোম-অফিসের কাজ।
জেলা/শহর পর্যায়ের দরিদ্রদের তালিকা করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে দেশের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে। তালিকা করতে বলেছেন এমন সব নিম্নবিত্ত/নিম্নমধ্যবিত্তদের, যারা হাত পাততে পারছেন না। নির্দেশনা মহৎ। কিন্তু মহৎ হলেই কি সেটা বাস্তবায়নযোগ্য?
WHO পরামর্শ দিয়েছে, প্রতিটি দেশে করোনাভাইরাস টেস্টের পরিমাণ বাড়াতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশে এই পরামর্শ অনুযায়ী “টেস্ট টেস্ট টেস্ট” আমরা করতে পারিনি অনেকদিন। কেউ কেউ অবশ্য বলছেন, আইইডিসিআর প্রক্রিয়াগত দিক থেকে ঠিক পথ অনুসরণ করেছে। তবে সমস্যা একটা হয়েছে বটে। বিভাগীয় পর্যায়ে টেস্টিং এর সুবিধা পৌঁছাতে আমাদের বেশ কিছুটা সময় লেগে গেছে। করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার হারে আমরা বিশ্বে ২ এপ্রিল পর্যন্ত সর্বনিম্ন (প্রতিদিন গড়ে ১০টি টেস্ট)। তবে যা-ই হোক, এখন বিভাগীয় পর্যায়ে কিছু টেস্টিং সেন্টার খোলা হয়েছে। পরিস্থিতি যাচাই করার জন্য টেস্টের পরিধি বাড়ানো হবে বলে জানানো হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তরফ থেকে। এপ্রিলের ৩ তারিখ ৫৫৩টি স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়েছে। আগের তুলনায় বেশ দ্রুতই!
বিগত কয়েকদিনের খবরে দেখা যাচ্ছে, পাসপোর্টের ঠিকানা ভুয়া হওয়ায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বিদেশ-ফেরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের। সেটা ঘটছে প্রবাসী-বাঙালিদের দ্বারা বাহিত এই করোনা বিপর্যয়ের সময়ে।
শরীয়তপুর, মাদারিপুর, বরিশাল আর উত্তরবঙ্গের এলাকাগুলোতেই ঘটছে এই ঘটনা। হয়তো অনেকেরই জানা আছে, এই স্থানগুলো বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির অন্যতম কেন্দ্র। পাসপোর্টে ঠিকানা দেয়া আছে অথচ স্থানীয় প্রশাসন আর পুলিশের বাহিনী মিলে খুঁজে বের করতে পারছে না এদের। কিন্তু কেন খুঁজে পাওয়া যাবে না পাসপোর্টের ঠিকানায়?